জেলা প্রশাসকের সংবাদ সম্মেলন পুনরায় প্রকাশিত ফলাফল আন্তরিকভাবে গ্রহণ করার অনুরোধ
খুলনার সরকারি স্কুলগুলোতে প্রকাশিত ফলাফলের ত্র“টির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে ৩ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। গতকাল রবিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসান। তিনি বলেন, গত শনিবার খুলনার অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মোঃ নূর-ই-আলমকে সভাপতি এবং খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি বিভাগের লেকচারার ইঞ্জিনিয়ার এম এ মঈন ও নগর গোয়েন্দা পুলিশের সিনিয়র সহকারী কমিশনার ভাস্কর সাহাকে সদস্য করে এ কমিটি গঠন করা হয়। গঠিত এ কমিটিকে ৭ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দাখিল করার জন্য বলা হয়েছে। অন্যদিকে, রবিবার বেলা ১১টায় বাদ পড়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যান। জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসান অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক এবং ৭টি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে নিয়ে তার সম্মেলন কক্ষে অভিভাবকদের মুখোমুখি হন। মোঃ ইউনুছ আলী বলেন, তার ছেলে রাহাতুল ইসলাম শিহাব নগরীর সেন্ট জোসেফস স্কুলে ৪র্থ মেধা স্থান অধিকার করে। তবে খুলনা জিলা স্কুলে চান্স পাওয়ায় সেখানে ভর্তি ফরমও সংগ্রহ করেন। আর এদিকে সেন্ট জোসেফস স্কুলে ভর্তির সময় শেষ হয়ে যায়। তবে সংশোধিত ফলাফলে চান্স না পাওয়ায় শিহাবের কোথাও ভর্তি সুযোগ নেই বলে জানান তিনি।অভিভাবক শেখ মোঃ রকিবুল আলমসহ কয়েক জন অভিভাবক বলেন, ফলাফল প্রকাশের ক্ষেত্রে অনিয়ম-দুর্নীতি হয়েছে। ভর্তি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে এমন ঘটনা খুলনায় অতীতে কখনো ঘটেনি। অভিভাবকরা সংশোধিত ফলাফলে বাদ পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য সংশ্লিষ্ট স্কুলে নতুন ইউনিট খোলার জোর দাবি জানিয়েছেন। অভিভাবকরা তাদের বক্তব্যে ব্যাপক ক্ষোভ প্রকাশ করেন। একপর্যাযে সভাস্থলে হৈ চৈ শুরু হয় এবং উত্তেজনা দেখা দেয়। জেলা প্রশাসক ও পুলিশের একজন এস আই বারবার অভিভাবকদের শান্ত করার চেষ্টা করেন। জেলা প্রশাসক অভিভাবকদের কাছে দুঃখ প্রকাশ করেন। এদিকে রাতে জেলা প্রশাসক মোঃ আমিন উল আহসান স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, অনাকাঙ্খিত ও অনভিপ্রেত কারিগরি ত্র“টির কারণে উদ্ভূত এ পরিস্থিতির জন্য মহানগরের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ভর্তি কমিটি আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করে এবং সকল অভিভাবক, শিক্ষার্থী ও সচেতন নাগরিকদের ফলাফল আন্তরিকভাবে গ্রহণ করে সত্যের প্রকাশ সহজভাবে গ্রহণ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এতে আরো উল্লেখ করা হয়, নগরীতে অবস্থিত সাতটি বিদ্যালয়ের তৃতীয় ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি পরীক্ষা গত ১৯ ও ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর উত্তরপত্র বিদ্যালয়গুলোর বিষয়ভিত্তিক শিক্ষকদের মাধ্যমে যথাযথভাবে মূল্যায়ন করে টেবুলেশন শীট প্রস্তুত করা হয়। মাইক্রোসফট এক্সেল শীটে টেবুলেশন শীট প্রস্তুতের পর অনলাইনে আপলোডের জন্য সিএসভি ফরম্যাটে রূপান্তরিত করা হয়। আপলোড করা হলে অনলাইনে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ফলাফল প্রকাশের দিনই ২/১ বিদ্যালয়ের অনলাইনে প্রকাশিত ফলাফলের সাথে ম্যানুয়ালি প্রস্তুতকৃত টেবুলেশন শীটের গরমিল দেখা দেয়। উদ্ভূত অবস্থায় মহানগরের সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি কমিটি ২০১৭ এর জরুরী সভা আহ্বায়ন করা হয়। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে সকল ফলাফল স্থগিত করে টেবুলেশন শীটের সাথে অসামঞ্জস্যতা পূন:নীরিক্ষা করে পুনরায় ফলাফল প্রকাশের ও কারিগরি ত্র“টির কারণ অনুসন্ধানের নিমিত্ত তদন্ত কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এই সিদ্ধান্তেও প্রেক্ষিতে গত ২২ ডিসেম্বর সকল বিদ্যালয়ের প্রতিটি ইউনিটের শিক্ষকদের প্রস্তুতকৃত টেবুলেমন শীট; টেবুলেমন শীট অনুসারে কম্পিউটারে প্রস্তুতকৃত এক্সেল ফরম্যাটে প্রস্তুতকৃত টেবুলেশন শীট সঠিক পাওয়া যায়। তবে কয়েকটি স্কুলের এক্সেল ফরম্যাচে প্রস্তুত করা টেবুলেশন শীট সিএসভি ফরম্যাটে রূপান্তর করে অনলাইনে আপলোডের সময় কারিগরি ত্র“টির কারণে উক্ত বিদ্যালয়সমূহের ভুল ফলাফল প্রকাশিত হয়। কমিটি পূন:পরীক্ষান্তে সঠিকভাবে ফলফল প্রস্তুত করে এবং পূর্বেও ফলাফল বাতিলপূর্বক সংশোধিত ফলাফল ২২ ডিসেম্বর শুক্রবার পূন:প্রকাশ করে। কমিটি অত্যন্ত স্বচ্ছতা, নিরপেক্ষতা ও সততার সাথে ভর্তি পরীক্ষা প্রাপ্ত নম্বরের ভিত্তিতে ফলাফল প্রদান করেছে।